মুমিন বান্দার জীবনে দু‘আ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দুনিয়া ও আখিরাতে সকল আশা আকাংখা পূরণ হওয়া, সব ধরণের কল্যাণ ও মঙ্গল লাভ করা এবং সর্বপ্রকার বালাামুসীবত ও অকল্যাণ-অমঙ্গল থেকে নিরাপদ থাকার একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে দু‘আ। বান্দা যখন আল্লাহকে ডাকে, আল্লাহর কাছে দু‘আ করে আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দেন। তার দু‘আ কবুল করেন। তার প্রতি সন্তুষ্ট হন। তার গুনাহ ক্ষমা করেন। তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে-
اُدْعُوْنـِيْ اَسْتَجِبْ لَكُمْ اِنَّ الَّذِيْنَ يَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِيْ سَيَدْخُلُوْنَ جَهَنَّمَ دَاخِرِيْنَ.
অর্থ: তোমরা আমার কাছে দু‘আ করো, আমি তোমাদের দু‘আ কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকবে (অর্থাৎ, আমার কাছে দু‘আ করার ব্যাপারে অহংকার করবে) তারা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (সূরা মু’মিন, আয়াত: ৬০)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-
وَاِذَا سَاَلَكَ عِبَادِيْ عَنِّيْ فَاِنِّيْ قَرِيْبٌ اُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيْبُوْا لِيْ وَلْيُؤْمِنُوْا بِيْ لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُوْنَ.
অর্থ: যখন আপনার কাছে আমার বান্দারা আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে তখন তাদেরকে বলুন নিশ্চয় আমি তাদের নিকটে আছি। দু‘আকারী যখন আমার কাছে দু‘আ করে তখন আমি তার দু‘আ কবুল করি,সুতরাং তারাও (আমার বান্দারাও) যেন আমার কথায় সাড়া দেয়। (আমার আদেশ-নিষেধ মেনে নেয়) আমার প্রতি ঈমান রাখে,তাহলে তারা সঠিক পথ প্রাপ্ত হবে। (সূরা বাকারা, আয়াত:১৮৬)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
اَلدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ
অর্থ: দু‘আই হচ্ছে ইবাদত। (তিরমিযী, হাদীস:২৯৬৯)
তিনি আরো বলেন-
اَلدُّعَاءُ مُخُّ الْعِبَادَةِ
দু‘আ হচ্ছে ইবাদতের মগজ। (তিরমিযী, হাদীস:৩৩৭১)
তিনি আরো বলেন-
لَيْسَ شَيْءٌ اَكْرَمَ عَلَى اللهِ تَعَالٰى مِنَ الدُّعَاءِ
অর্থ: আল্লাহর নিকট দু‘আর চেয়ে অধিক প্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ কোনো জিনিস নেই। (তিরমিযী, হাদীস:৩৩৭০)
তিনি আরো ইরশাদ করেন-
مَنْ لَمْ يَسْاَلِ اللهَ يَغْضَبْ عَلَيْهِ
অর্থ: যে আল্লাহর কাছে চায়না আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। (তিরমিযী, হাদীস:৩৩৭৩)
তিনি আরো বলেন,
اَلدُّعَاءُ سِلاَحُ الْمُؤْمِنِ، وَعِمَادُ الدِّيْنِ، وَنُوْرُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ.
অর্থ: দু‘আ মুমিনের অস্ত্র, দীনের স্তম্ভ, আসমান ও যমীনের নূর। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস:১৮১২)
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন,
اِنَّ الرَّجُلَ لَيُحْرَمُ الرِّزْقَ بِالذَّنْبِ يُصِيْبُهُ وَلَا يَرُدُّ الْقَدَرَ اِلَّا الدُّعَاءُ وَلَا يَزِيْدُ فِي الْعُمُرِ اِلَّا الْبِرُّ.
অর্থ: নিশ্চয় মানুষ রিযিক থেকে বঞ্চিত হয় তার কৃত গুনাহের কারণে, দু‘আই কেবলমাত্র তাকদীরকে পরিবর্তন করতে পারে আর নেক কাজই একমাত্র হায়াত বৃদ্ধি করতে পারে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস: ২২৩৮৬)
مَنْ اُعْطِىَ الدُّعَاءَ لَمْ يُحْرَمِ الْاِجَابَةَ
যাকে দু‘আ করার তাওফীক দেয়া হয়, কবুল হওয়ার নেয়ামত থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয় না। (শু‘আবুল ঈমান, হাদীস: ৪৫২৮)
Leave a Reply